HomeBlogকিভাবে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ব্যান্ডউইথ ক্যালকুলেট করবেন

কিভাবে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ব্যান্ডউইথ ক্যালকুলেট করবেন

গত পোস্টে আমরা বিস্তারিতভাবে ব্যান্ডউইথের ধারণা পেয়েছি। আপনি যদি গত পোস্টটি না পড়ে থাকেন, তাহলে চট করে পড়ে আসতে পারেনঃ ব্যান্ডউইথ কি?

আজ আমরা আলোচনা করব কিভাবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ব্যান্ডউইথ ক্যালকুলেশন করবেন। আমরা অনেকেই মনে করি, একবারে ব্যান্ডউইথ বেশি অথবা আনলিমিটেড নিয়ে ওয়েবসাইট শুরু করলে পরবর্তীতে আর কোনো ঝামেলা করতে হবে না। আপনি যদি আমাদের হোস্টিং স্পেস নিয়ে লেখা পোস্টগুলো পড়ে থাকেন, তাহলে বুঝতে পারবেন, প্রথমেই বড় কোনো প্যাকেজ না নিয়ে যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকুর জন্য নির্ধারিত প্যাকেজটি নিলে ভাল হবে, এতে আপনার অনেক টাকাও খরচ হওয়া থেকে বেঁচে যাবে। মূল কথা হলো, আপনি কেন শুধু শুধু টাকা দিবেন যেটির আপনার প্রয়োজনই নেই! হোস্টিং স্পেস যেভাবে ক্যালকুলেশন করে মূল প্রয়োজন স্পেসের বিষয়ে একটি ধারণা পাওয়া যায়, তেমনি ব্যান্ডউইথ ক্যালকুলেশনের মাধ্যমেও আপনি একটি ধারণা পাবেন যে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য শুরুতে কতটুকু ব্যান্ডউইথ থাকা উচিৎ।

ব্যান্ডউইথ ক্যালকুলেশনের জন্য প্রথমে আপনাদের যে বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে, সেগুলো হলো -

  • প্রতি মাসে ভিজিটরের সংখ্যাঃ প্রতি মাসের ভিজিটর বলতে বোঝায় আপনার ওয়েবসাইট প্রত্যেক মাসে কতজন ভিজিট করবে।
  • গড় পেজ ভিউঃ পেজ ভিউ বলতে বোঝায় প্রত্যক ভিজিটর যে কয়টা পেজ ভিজিট করে। ধরুন আপনার ওয়েবসাইটে একজন ভিজিটর ভিজিট করল এবং তারপর সে আপনার ওয়েবসাইটের আরো ৪ টি পেজ দেখল ; ৪টি পেজ হতে পারে About page, Contact page এবং দুইটা ব্লগ পোস্ট। সুতরাং, এখানে আপনার ভিজিটর একজন অর্থাৎ একটি এবং পেজ ভিউ হলো মোট ৫ টি। কারণ প্রথমে ভিজিটর যে পেজের সাহায্যে সাইটে প্রবেশ করল সেটি, এছাড়া বাকি আর ৪টি পেজ যে দেখল ; মোট ৫টি পেজ ভিউ।
  • গড় পেজ সাইজঃ পেজ সাইজ বলতে বোঝায় আপনার যেকোনো একটি পেজের সাইজ কত। তা হতে পারে ২০০ কিলোবাইট বা ১ মেগাবাইট অথবা আরো কম-বেশি। ধরুন আপনি ব্লগের প্রতি পোস্টে ৪টি ২০০ কিলোবাইটের ছবি ব্যবহার করেছেন অর্থাৎ আপনার মোট ছবির সাইজ হবে ৮০০ কিলোবাইট। বাকি সব কিছু মিলিয়ে আমরা ধরে নিলাম পেজের সাইজ হলো ১ মেগাবাইট। এভাবে আপনার ওয়েবসাইটের সকল পেজের একটি গড় সাইজ বের করতে হবে। ধরে নিই, আমাদের ওয়েবসাইটের গড় পেজ সাইজ হলো ১ মেগাবাইট, যেটি সাধারণত একটি ব্লগ ওয়েবসাইটের থাকে।

মজার বিষয় হলো, বীজগণিতের সূত্রের মত আমরা ব্যান্ডউইথ ক্যালকুলেশনের জন্য একটি সূত্র ব্যবহার করতে পারি। সূত্রটি হলো -

ব্যান্ডউইথ = মাসিক ভিজিটর x গড় পেজ ভিউ X গড় পেজ সাইজ

অর্থাৎ আপনার প্রতি মাসের ভিজিটর, গড় পেজ ভিউ এবং গড় পেজ সাইজের গুণফলই হবে আপনার ওয়েবসাইটের ব্যান্ডউইথ প্রয়োজনীয়তা।

অনেক সময় দেখা যায়, ওয়েবসাইট যখন ভিজিট করা হয় ওয়েবসাইটটি অনেক ধীরে লোড নেয় অর্থাৎ ওয়েবসাইট খুলতে বেশ সময় নিচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যান্ডউইথ একটু বেশি প্রয়োজন হয়। তাই ব্যান্ডউইথ বের করার সময় এই বিষয়টিকেও আমাদের খেয়ালে রাখা উচিৎ। এ বিষয়টি আমরা একটি টলারেন্স নাম্বার হিসেবে ধরব। আমাদের পূর্বের সুত্রের সাথে উক্ত টলারেন্স নাম্বার গুণ করলেই পেয়ে যাবো ব্যান্ডউইথ।

ধরে নিই, আমাদের টলারেন্স নাম্বার ১.৩৩। আপনাদের ওয়েবসাইট যদি বেশি ধীরগতির হয় তবে টলারেন্স নাম্বার একটু বেশি ধরতে হবে। সুতরাং -

ব্যান্ডউইথ = মাসিক ভিজিটর x গড় পেজ ভিউ x গড় পেজ সাইজ x টলারেন্স নাম্বার (১.৩৩)

এখন আমরা দেখব যেসব ওয়েবসাইটে ডাউনলোডের জন্য ফাইল থাকে, সেগুলোর জন্য কিভাবে ব্যান্ডউইথ ক্যালকুলেট করা যেতে পারে। ধরুন আপনার ওয়েবসাইটে কিছু ডাউনলোডের জন্য ফাইল আছে। এখন আপনি ব্যান্ডউইথ কিভাবে বের করবেন। এর জন্য প্রথমে পূর্বের মত ব্যান্ডউইথ ভ্যালু বের করে নিন - মাসিক ভিজিটর x গড় পেজ ভিউ x গড় পেজ সাইজ। উক্ত ভ্যালু বের করার পর যে সংখ্যাটি হবে সেটির সাথে যা যোগ করতে হবে তা হলো -

আপনার ওয়েবসাইটে প্রতিদিন কতগুলো ফাইল ডাউনলোড হবে এবং প্রতি ফাইলের গড় সাইজ কত হতে পারে। ধরে নিই, আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিদিন ৫টি ফাইল ডাউনলোড হবে এবং ফাইলের গড় সাইজ ২ মেগাবাইট। এখন যদি আপনি প্রতিদিন ফাইল ডাউনলোড এবং গড় ফাইল সাইজ গুণ করেন তাহলে একটা প্রতিদিনের হিসাব বের হবে। তাই মাসিক হিসাবটি পাওয়ার জন্য উক্ত গুণফলকে ৩১ দিয়ে গুণ করতে হবে। তাহলে এখন যে গুণফল হলো এটিকে আমরা আগের গুনফলের সাথে যোগ করে দিব। অর্থাৎ -

ব্যান্ডউইথ = মাসিক ভিজিটর x গড় পেজ ভিউ x গড় পেজ সাইজ + (প্রতিদিনের ফাইল ডাউনলোড সংখ্যা x গড় ফাইল সাইজ) x ৩১

সুতরাং, এই উপায়ের আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যান্ডউইথ বের করতে পারবেন।

আশা করি, বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। কোনো সমস্যা হলে, সাপোর্ট এ ইমেইল করুন অথবা কমেন্ট করুন।

আসিফ ইমতিয়াজ প্রমি
আসিফ ইমতিয়াজ প্রমি
টেকনলজি নিয়ে আমার আগ্রহের কমতি নেই। অসংখ্য বিষয়ের মধ্যে ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট বেশ মজার লাগে। ওয়েবসাইটের এর প্রাণ হলো হোস্টিং। সুতরাং হোস্টিং এবং ওয়েবসাইট সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুঁজতেই। সেই জ্ঞানে কিছু শব্দ ব্লগ পোস্টগুলোতে লিপিবদ্ধ করি। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যান্য হোস্টিং কোম্পানি থেকে Host The Website বেশ উন্নত। ব্লগ লেখার শখ আগে থেকেই। তাই ব্যস্ত সময়ের ফাঁকে দু'একটি শব্দ লেখা হয় উক্ত ব্লগে।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments