মার্কেটে বিভিন্ন ধরণের ওয়েব হোস্টিং আছে,এর মধ্যে কোনটা আপনার জন্য পারফেক্ট সেটা অনেক কনফিউজিং বিষয়।শেয়ারড হোস্টিং,ভিপিএস হোস্টিং এবং ডেডিকেটেড হোস্টিং এর মধ্যে আপনি কোনটা চয়েস করবেন?এই আর্ক্টিকেলে আমরা হোস্টিং প্ল্যানগুলোর মধ্যে বেসিক পার্থক্য দেখাবো যাতে আপনি নিজের জন্য সঠিক হোস্টিং টি বেছে নিতে পারেন।
রিলেটড আরো দুটি আর্টিকেল আপনার জেনে নেয়া উচিতঃ
১.আপনি কখন বুঝবেন আপনার সাইট শেয়ারড হোস্টিং থেকে ভিপিএস হোস্টিংয়ে আপগ্রেড করতে হবে?
২.কখন আপনাকে ভিপিএস হোস্টিং থেকে ডেডিকেটেড হোস্টিং এ আপগ্রেড করতে হবে?
শেয়ারড হোস্টিং
শেয়ারড হোস্টিং অনেকটা কোনো এপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে বাস করার মতো।সব রেসিডেন্টরা একই লোকেশনে থাকে এবং কমন রিসোর্সগুলি যেমন পুল,পার্কিং লট,প্লে গ্রাউন্ড প্রভৃতি সবাই শেয়ার করে।তেমনি শেয়ারড হোস্টিং এর ক্ষেত্রেও সব একাউনট্যান্স রা এভাইলেবল রিসোর্সগুলো যেমন CPU time,Memory,Disk space একসাথে শেয়ার করে। অর্থাৎ শেয়ারড হোস্টিং হচ্ছে সবচেয়ে কমন হোস্টিং সল্যুশন যার প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্বল্প খরচ। শেয়ারড হোস্টিং নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এই হোস্টিং এর সকল রিসোর্স যেমন অপারেটিং সিস্টেম, ডিস্ক স্পেস, ব্যান্ডউইথ ইত্যাদি অনেক ইউজার এর সাথে শেয়ার করা হয়।
বেসিকালি শেয়ারড হোস্টিং একাধিক ইউজার কে তাদের ইনফরমেশন হোস্ট করতে এলাউ করে। একাধিক ইউজার মানে ২/৩ জন নয়। ২০০/৩০০ এমনকি ১০০০ ও হতে পারে। আপনি যদি ১০০০ জনের ১ জন হন তাহলে আপনি একটা সার্ভার এর ১/১০০০ ভাগ আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। এবং পুরো খরচের ১০০০ ভাগের ১ ভাগ আপনার কাছ থেকে কম্পানি নিচ্ছে। তাই এর দাম এত কম। এই সল্যুশন ছোট-খাট যে কোন ওয়েবসাইটের জন্য যথেষ্ট। যাই হোক, এর ব্যবহার ক্ষেত্রে অনেক ধরনের লিমিটেশন থাকে। যখন আপনার ওয়েবসাইট এবং গ্রাহকের পরিধি ও প্রসার বাড়তে থাকে, আপনি দেখবেন আপনার ওয়েবসাইট ঠিক আগের মত ইউজার ফ্রেন্ডলি নেই। হয়ত ওয়েবসাইট ডাউন অথবা স্লো এমন অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখা দেবে। এছাড়া আপনার ওয়েবসাইট এর প্রাইভেসি না থাকার কারনে আপনি চাইলেও সর্বোচ্চ সিকিউরিটি দিতে পারছেন না যেহেতু সার্ভার অ্যাক্সেস আপনার হাতে না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে শেয়ারড হোস্টিং বাদ দিয়ে আপনাকে ভিপিএস বা ডেডিকেটেড হোস্টিং এ যেতে হবে।
ভিপিএস হোস্টিং
ভিপিএস হোস্টিং কে একটি কনডোর মালিকানার সাথে তুলনা করা যায়।কনডোতে বাস করার সময় আপনাকে প্রোপার্টি শেয়ার করতে হবে।প্রোপার্টি মেইনটেন এবং রিপেয়ার করার সব দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবে।এখানে প্রতি বিল্ডিংয়ে আরো অনেক বাসিন্দা থাকবে।
ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভারের ক্ষেত্রে,আপনার এলোটেড রিসোর্স সবার সাথে শেয়ার করতে পারবেন না।ওভারল CPU টাইম এবং মেমরি মেশিনে থাকা সব ইউজার শেয়ার করতে পারবে।কিন্তু একই সময়ে রিসোর্সগুলি প্রতিটি একাউন্টের জন্য ডেডিকেটেড হবে।এটি শেয়ারড হোস্টিং চেয়ে আরো বেশি পাওয়ার এবং ফ্লেক্সিবিলিটি এলাউ করবে।ধরুন একটা ডেডিকেটেড সার্ভার এর ডিস্ক স্পেস ৫০০ জিবি এবং ব্যান্ডউইথ ৫০০০ জিবি। এখন এই সার্ভার টাকে ১০ ভাগে সমান ভাবে ভাগ করলাম। তাহলে এক এক ভাগে ডিস্ক স্পেস ৫০ জিবি এবং ব্যান্ডউইথ ৫০০ জিবি করে পড়লো। এই এক একটা ভাগ কে বলা হয় ভারচুয়াল সার্ভার। তাহলে পুরো সার্ভার তা ১০ জন ইউজার ব্যবহার করলে আপনি ১০ জনের ১ জন। ১০০০ জনের ১ জন হয়ে আপনি শেয়ারড হোস্টিং এ যে সুযোগ সুবিধা পেতেন, ১০ জনের ১ জন হয়ে ডেফিনিটলি আপনি অনেক বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। আপনার কাছে ভিপিএস এর রুট কন্ট্রোল প্যানেল থাকায় আপনার ওয়েবসাইট এর সিকিউরিটি শেয়ারড হোস্টিং এর তুলনায় অনেক ভালভাবে মেইনটেইন করতে পারবেন। অধিক পরিমান ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের সুযোগ থাকায় আগের থেকে অনেক বেশি ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট এ ডাউনটাইম ছাড়া প্রবেশ করতে পারবে। রিসোর্স বেশি থাকার কারনে ভিপিএস এর দাম ও তুলনামুলক ভাবে একটু বেশি।
ডেডিকেটেড হোস্টিং
ডেডিকেটেড হোস্টিংকে একটি নিজস্ব বাড়ি কেনার সাথে সাথে তুলনা করা যায়।মেশিনে এভাইলেবল সব রিসোর্সে আপনি এক্সেস করতে পারবেন।আপনি ছাড়া অন্য কেউ যেমন আপনার বাড়ি ব্যবহার করতে পারবে না তেমনি ডেডিকেটেড হোস্টিং এর রিসোর্সগুলো আপনি ছাড়া আর অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। ডেডিকেটেড ওয়েব হোস্টিং এখন ছোট-বড় সকল ধরনের ব্যবসায়ের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে যেহেতু এটা আপনাকে অনেক বেশি ফ্লেক্সিবিলিটি দিয়ে থাকে। এখানে একটা ইনফরমেশন ই যথেষ্ট “আপনি একাই ১০০০ জন শেয়ারড হোস্টিং ইউজার বা ১০ জন ভিপিএস ইউজার এর সুবিধা ভোগ করতে পারবেন”। একটা ভাল ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং এর মাধ্যমে আপনি লক্ষ লক্ষ ভিজিটর কে আপনার ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সুযোগ দিতে পারবেন। ডেডিকেটেড হোস্টিং এ আপনি সব কিছুই নিজের কন্ট্রোল এ রাখতে পারবেন।
আশাকরি এই আর্টিকেল থেকে আপনি হোস্টিং সম্পর্কে কিছুটা জানলেন।তো কোনটা আপনার জন্য পারফেক্ট-ভিপিএস নাকি ডেডিকেটেড সার্ভার?